ডিপার্টমেন্ট অব কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ
“Leadership is not about the next election, it's about the next generation.”
ব্রিটিশ লেখক সাইমন সিনেক।
বঙ্গবন্ধু আক্ষরিক অর্থেই গোটা বিশ্ব সম্প্রদায়ের নেতা ছিলেন। উনার ব্যক্তিত্ব এতোটাই বিশাল ছিল যে বিশ্বের সকল প্রান্তের নেতার মাঝেও বঙ্গবন্ধুকে নেতা মনে হতো। উনার উদারতা, উনার নেতৃত্ব গুণাবলী ও জনগণের মনে স্থান তৈরি করে নেওয়ার ক্ষমতা অভিভূত করেছে বিশ্বের সকল দেশের নেতাকে। ফিদেল ক্যাস্ট্রো তাঁর বিশালতার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছিলেন, “আমি হিমালয় দেখিনি, কিন্তু আমি শেখ মুজিবকে দেখেছি।”
বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু কি পরিমান আত্মত্যাগ করেছেন তা আসলেই ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। বাঙালি জাতির অধিকার এবং তৎকালীন ক্ষমতাসীনদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার থাকার ফলে তাঁকে ১৪ বছর জেল খাটতে হয়েছে। দিনের হিসাবে এই সংখ্যা দাড়ায় ৪ হাজার ৬৮২ দিন। এই দীর্ঘ সময় জেলে থাকা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু দেশ ও গোটা বিশ্ব সম্প্রদায়ে যে প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছেন তা আজ পর্যন্ত অতুলনীয়।
একটি জাতি গড়ে ওঠে ধাপে ধাপে। আমাদের জাতিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একক নেতৃত্বের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের পাশাপাশি বাঙালি জাতি গঠনের সকল ক্ষেত্রে বিস্ময়কর অবদান রেখেছেন। আমরা যদি ইতিহাস দেখি, তাহলে দেখতে পাবো যে স্বাধীন জাতি হিসাবে আমাদের পরিচয় কখনই ছিল না। ব্রিটিশ শাসনের অধীন থেকে মুক্তি পেয়ে আমরা যখন “পূর্ব পাকিস্তান” হিসাবে পরিচয় পাওয়ার পরেও প্রকৃত অর্থে আমরা স্বাধীনতা পাইনি। যে জাতির উপরে তাদের বহু বছরের মাতৃভাষা বাদ দিয়ে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে বিদেশি এক ভাষা চাপিয়ে দেওয়া হয়, যে জাতিকে তাদের প্রাণের নেতার কাছ থেকে অন্যায়ভাবে বিচ্ছিন্ন রাখা হয় তাদেরকে আর যাই হোক স্বাধীন জাতি বলা যায় না।
সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন কতটা কঠিন তা আমরা আমাদের ইতিহাস দেখলে অনুধাবন করতে পারবো। ১৮৫৭ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে সিপাহী-জনতার সম্মিলিত সংগ্রাম সফল হয়নি, যার অন্যতম কারন শুরু থেকে দক্ষ নেতৃত্বের অভাব। ফলে প্রায় দুই শতক ব্রিটিশদের অধীনে থাকতে হয়েছে আমাদেরকে। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভক্ত হয়ে ভারত ও পাকিস্তানের সৃষ্টি হলেও একে ঠিক স্বাধীনতা বলা যায় না, কারন আমাদেরকে পশ্চিম পাকিস্তানের অধীনেই থাকতে হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন দেশে স্বাধীনতার জন্য এখনো অনেক জাতি সংগ্রাম করে চলেছে, কিন্তু তারা সফলতা পাচ্ছে না। শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর পক্ষেই সম্ভব হয়েছিল দেশের সাড়ে সাত কোটি জনগণকে স্বাধীনতার জন্য উজ্জীবিত করে তোলা। তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে বাঙ্গালিদেরকে উজ্জীবিত করেছেন, নিজে আত্মত্যাগ করে সকলকে উজ্জীবিত করেছেন।