জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানতে মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন চেয়েছেন আপিল বিভাগ। রাষ্ট্রপক্ষকে ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ওই প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। তবে নির্ধারিত সময়ে এ প্রতিবেদন তৈরি না হওয়াতে আদালতে দাখিল করা হয়নি।

এর আগে, খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিতে তার স্বাস্থ্য প্রতিবেদন দাখিল না করায় বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা হট্টগোল ও হৈচৈ করায় প্রধান বিচারপতিসহ ৬ বিচারক এজলাস ছেড়ে চলে যান।

তবে বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনের নেতারা মনে করছে মেডিকেল বোর্ড যদি মানবিক দিক বিবেচনা করে উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজনের বিষয়টি সুপারিশ করে থাকে তাহলে আদালতে জামিন পেতে পারেন খালেদা জিয়া। তার মুক্তির বিষয়টি নির্ভর করছে তার স্বাস্থ্য প্রতিবেদনের ওপর। তাই (বিএসএমএসইউ) মেডিকেল বোর্ড সঠিক স্বাস্থ্য প্রতিবেদন আদালতে দিতে ঝামেলা করছে। 

এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেছেন, খালেদা জিয়ার সবশেষ স্বাস্থ্যগত অবস্থা নিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খালেদা জিয়া এখনো ভালো নেই।

স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছেন না। জয়েন্টে ব্যথার কারণে তার হাড় বাঁকা হয়ে গেছে। হুইল চেয়ারেই চলছেন তিনি। সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন না দীর্ঘ সময়। এরপরও বিএনপি মেডিকেল বোর্ড সত্য প্রকাশ করবে কিনা সন্দেহ প্রকাশ করছেন তিনি।

এর আগে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে বিজয়ী বিএনপি প্রার্থীরা খালেদা জিয়ার মুক্তি কথা বলতে সংসদে গিয়ে ছিল।

সংসদে যোগ দেয়া পাঁচজনের মধ্যে হারুনুর রশীদ প্রথম দিনেই অধিবেশনে দেয়া বক্তব্যে তাদের সংসদে অংশ নেয়ার বিনিময়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়েছেন।

তবে তখন রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন চলছিল বিএনপি প্রার্থীরা সংসদে গেলে খালেদা জিয়ার মুক্তি মিলবে। তাদের সংসদে যাওয়ার ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে।

বিএনপি সিনিয়র নেতারা বারবারই বলছে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে না চাইলে খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়, এটি তারা বিশ্বাস করেন। 

প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্ট ও নিম্ন আদালত মিলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এখন ১৭টি মামলা বিচারাধীন। এরমধ্যে দুটি মামলায় (জিয়া অরফানেজ ট্রাষ্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাষ্ট দুর্নীতি মামলা) তার ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। এরমধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাষ্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে করা আপিল আপিল বিভাগে বিচারাধীন। ওই আপিলের সঙ্গে খালেদা জিয়ার জামিন চাওয়া হয়েছে। যা এখনও আপিল বিভাগে বিচারাধীন। আর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাষ্ট দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালতের ৭ বছরের সাজার বিরুদ্ধে করা আপিল হাইকোর্টে বিচারাধীন। তবে এই মামলায় খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন খারিজ করে রায় দেন হাইকোর্ট। এই খারিজের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন করা হলো। ওই দুই মামলায় জামিন পেলেই মুক্তি পাবেন খালেদা জিয়া।