ক্ষমতার অপব্যবহার করে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে নরসিংদী সদর মাধবদী থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন শাহীন। নরসিংদীর মাধবদী এলাকা ঘুরে এমনটাই অভিযোগ পাওয়া গেছে ছাত্রলীগ পদধারী দেলোয়ার হোসেন শাহীনের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, এলাকায় সন্ত্রাসী চাঁদাবাজি, লুটপাট সহ দিনে দুপুরে ভাঙচুর করেই চলে শাহীনের ক্ষমতার অপব্যবহার। তার বিরুদ্ধে কেউ সরাসরি প্রতিবাদ করতে গেলে তাকে নানা ভাবে হয়রানি করা হয়।

এলাকাবাসী জানায়, মাধবদী থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়ার পর এলাকার দোয়ানী বাজারে দেলোয়ার ২.৫ শতাংশ জমি কেনে এবং ১১ শতাংশ দখল করে। যার প্রতি শতাংশ জায়গার মূল্য ১৪লক্ষ টাকা। শতভাগ বিদ্যুতায়নের সময় মিটার প্রতি ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা করে নেয়। এতে সকলে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুললে দেলোয়ার প্রায় ১৪ মাস নিজের এলাকায় ঢুকতে পারেনি। এরপর সে বিএনপির সন্ত্রাসী লোকদের নিয়ে এলাকায় টেটাযুদ্ধের ছক একে গত ৭মে ২০২০ ইফতারের ২০মিনিট আগে নরসিংদী সদর থানা চরদিঘলদী ইউনিয়নে দোয়ানিতে টেটাযুদ্ধের মাধ্যমে ১৫ জন লোককে টেটাবিদ্ধ করে এলাকা দখল করে নেয়।

বর্তমানে এলাকার প্রায় ৫০০ লোক দেলোয়ার এর অত্যাচারে এলাকা ছাড়া। প্রতিরাতে বাড়িঘর লুটপাট,চাঁদা আদায়, গরু ছাগল জোর করে নিয়া যাওয়া সহ প্রায় ৩০০ শতাধিক বাড়িঘর ভাংচুর করে এবং বাজারের প্রায় ১৫ থেকে ২০টি  দোকানপাট বন্ধ করে দেয়। বিভিন্ন বাড়ি ঘর লুট করে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে দোয়ানি গ্রামের গত ৪০ দিনে বিপুল ক্ষতি করে।

তারা বলেন,  চরদিঘলদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংঘটন কার্যালয় ভাঙচুর ও লুটপাট করে, এতে প্রায় ১ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়। চরদিঘলদী ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী ও বর্তমানে অর্থবিষয়ক সম্পাদক জনাব নাজিম উদ্দিন প্রধানের ওয়ার্কশপ এর দোকান থেকে যন্ত্রপাতি, মেশিন ও অন্যান্য মালামাল সহ প্রায় ৬ লক্ষ টাকার পরিমান লুট করে। সালাম মোল্লার ভাই রহিম মোল্লার মুদি মালের দোকানে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে।

ইয়াকুব আলির দোকানে ও তাঁর ছেলে টেইলার্স হাসানের দোকান থেকে প্রায় ২ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে ও তার ঘর ভাংচুর করে প্রায় ৫০ হাজার ক্ষতি করে। জোহর আলির দোকান থেকে প্রায় ৫০ হাজার টাকা পরিমান মালপত্র লুট করে ও বাড়ি ঘরে লুটপাট করে ক্ষতির পরিমাণ ১ লক্ষ টাকা। ইদ্রিস আলি ফকিরের  সিমেন্টের দোকান থেকে প্রায় ২ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে। শুক্কুর আলির কাপড়ের দোকান থেকে প্রায় ৬০ হাজার টাকা পরিমাপ কাপড় লুট করে। আজিজের মিষ্টির দোকান থেকে প্রায় ২ লক্ষ টাকা পরিমাণ মালামাল লুট করে।

দোয়ানির পুর্বপাড়া আজিজের বিল্ডিং এর দরজা, জানালা ও গ্লাস ভাঙচুর করে ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি করে। বীরমুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও চরদিঘলদী ইউনিয়ন ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইকবাল হোসেনের বাড়িতে ভাঙচুর,লুটপাট করে প্রায় ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি করে। দোয়ানি পূর্বপাড়া আলামিনের ঘর ভাঙচুর ক্ষতি প্রায় ৫০ হাজার টাকা। ইদ্দিস আলি ফকিরের বাড়িতে রাতের আধাঁরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।যার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫ লক্ষ টাকা ও কাঁঠাল গাছ থেকে প্রায় ৬০-৭০ টা কাঠাঁল চুরি করে। হারিছের ঘর-বাড়ি ভাঙচুর ক্ষতির পরিমাণ ১ লক্ষ টাকা। রহিমের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট ক্ষতি প্রায় ১ লক্ষ টাকা। মোশারফের ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট ক্ষতি প্রায় ৭০-৮০ হাজার টাকা হয়। শাইয়া মিয়ার বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট প্রায় ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়।এলাকার সাবা মিয়ার বাড়ি ভাঙচুর ক্ষতি প্রায় ৫০ হাজার টাকা হয়। সাদেক মিয়ার বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট প্রায় ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়।

নেয়াবপূরের  আবুর ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট প্রায় ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়। ফেরুজ মিয়ার বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩ লক্ষ টাকা।

এছাড়াও নোয়াকান্দী জনাব নাজিমুদ্দিন প্রধানের বাড়িতে ও তাঁর ছোট ভাই শফিকুলের বিল্ডিং এর দরজা, জানালা ও গ্লাস ভাঙচুর ক্ষতি হয় প্রায় ২ লক্ষ টাকা। জনাব খলিল মেম্বারের বাড়িতে ভাঙচুর ক্ষতি হয় প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকা পরিমাণ। জনাব নাজিমুদ্দিনের চাচা সওদাগরের গরু জিম্মি করে ১৫ হাজার টাকা আদায় করে। জনাব নাজিমুদ্দীনের চাচাতো ভাই বিল্লাল মিয়ার গরু নিয়ে ১০ হাজার টাকা আদায় করছে। গাজির বাড়ির আবু ছাঈদের বাড়িতে ভাঙচুর করে তার ছোট ভাই দানিসের ঘরের মালামাল ভাঙচুর করে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ লক্ষ টাকা। চরদিঘলদী ইউনিয়ন ৫ নং আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব শেখ ফরিদ মেম্বারের (বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদের সম্মানিত সদস্য ) বাড়িতে ভাঙচুর করে। চরদিঘলদী ইউনিয়ন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনাব কামাল হোসেন প্রধানের বাড়িতে ভাঙচুর করে। দোয়ানি পশ্চিমপাড়া শাহিনের কাছ থেকে ধান কাটার চাঁদা হিসেবে ১৫ হাজার টাকা নেয়।

দোয়ানি পূর্বপাড়া সালাম মোল্লার ছাগল চুরি করে যার মূল্য ১৪ হাজার টাকা। পূর্বপাড়া আওয়ালের রাঁজহাঁস চুরি করে যার মূল্য ১০- ১২ হাজার টাকা। ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদ মেম্বারের ছোট ভাই  আয়েব আলির ছাগল নিয়ে জোরপূর্বক ২ হাজার টাকা আদায় করে।

মোল্লা বাড়ির হোসেন মোল্লা থেকে ধান কাটার জন্য ২০ হাজার টাকা চাঁদা নেয়। নোয়াবপূরের দিদার ডাক্তারের গরু চোরি হয় যার মূল্য প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। নোয়াবপূরের নুর ইসলামের গরু চুরি করে যার পরিমাণ প্রায় ৮০ হাজার টাকা। জনাব নাজিমুদ্দিন প্রধানের চাচাতো ভাই পেকাম্বরের ছেলে সালাউদ্দিনের গরু চুরি করে মূল্য ৫০ হাজার টাকা।

এলাকার মানুষ তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে থানায় অভিযোগ দিলেও দেলোয়ার গুরুপের বিরুদ্ধে মামলা না নেওয়ারও অভিযোগ দেয় গ্রামবাসী। যারা প্রত্যেকেই জামাত বিএপি'র পদধারী লোক। ইউনুস মিয়া চরদিঘলদী ইউনিয়ন যুবদল সভাপতিও রয়েছে।  তারা হলেন, শাহজাহান ফকির,জয়েন সেক্রেটারি চরদিঘলদী ইউনিয়ন বিএনপি, গোলাপ মাহমুদ,১ নং জয়েন সেক্রেটারি চরদিঘলদী ইউনিয়ন যুবদল, রানু মুন্সী,১নং সহসভাপতি চরদিঘলদী ইউনিয়ন বিএনপি,মোসলেম মিয়া,সাংঘটনিক সম্পাদক,চরদিঘলদী ইউনিয়ন বিএনপি,মামুন ফকির,সহসভাপতি চরদিঘলদী ইউনিয়ন যুবদল,মোঃ আলী মিয়া,সভাপতি ২নং ওয়ার্ড বিএনপি, চরদিঘলদী ইউনিয়ন শাখা,মোঃ বিলাত আলী,মোঃ আনোয়ার হোসেন,মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (সাবেক) ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য। তাদের এই ক্রমাগত তাণ্ডবে এলাকার অতিষ্ঠ সকল মানুষ তাদের দ্রুত বিচার দাবি করছে।