আজ দেশে ভিন্নমত পোষণকারীকে নিস্তব্ধ করে দেয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী জাতীয় অধ্যাপক তালুকদার মনিরুজ্জামানের স্মরণ সভা উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, তালুকদার মনিরুজ্জামান সাহেবরা সবসময় আসেন না। পৃথিবীতে খুব ক্ষণজন্মা পুরুষ তারা। সেই অল্প সময়ে তাদের কী অবস্থা সেটা তারা জানান দিয়ে যান। তাকে নিয়ে অনেক কথা অনেক স্মৃতি আছে। সে দিকে না গিয়ে এতটুকু বলতে চাই, তালুকদার মনিরুজ্জামান সাহেবের চলে যাওয়া দেশের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।

তিনি বলেন, আজকে যে রাষ্ট্র আমরা সবাই মিলে তৈরি করেছি এটা তো একটা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এ বিষয়টি তালুকদার মনিরুজ্জামান সাহেবের নিশ্চয় একটা দুঃখের কারণ ছিল। এরপর তিনি যে খুব একটা জনসম্মুখে আসতেন না, জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলেন; তার অন্যতম কারণ ছিল এটা।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে আমরা যে রাষ্ট্র তৈরি করেছি সেখানে মানুষের কোনো অধিকার নেই। সাধারণ মানুষ তারা একেবারে সাধারণ হয়ে গেছে। যে চিন্তা নিয়ে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম সেই চিন্তা, চেতনা, ধারণাগুলো এখন প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আজকে যারা শাসকগোষ্ঠী তারা খুব সচেতনভাবেই দেশটাকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করছে। খুব দুঃখ হয় যখন দেখি দেশের যারা গুণী মানুষ আছেন তাদের কথা বলার কারণে কারাগারে পাঠানো হয়। যদিও তারা কোনো রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকেন না।

মির্জা ফখরুল বলেন, তার এমন একটি উদাহরণ ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। তাকে শুধু ভিন্নমত পোষণ করার কারণে কারাগারে নিয়ে নিদারুণভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। যারা লিখেন, কথা বলেন এবং শুভ চিন্তা কাজ করতে চান আজকে তাদেরকেও পর্যদুস্ত করা হচ্ছে। দেশে আজ যারা ভিন্নমত পোষণ করতে চায়, ভিন্ন কথা বলতে চায় তাদেরকে বিভিন্নভাবে নিশ্চিহ্ন করা হচ্ছে, ছিন্ন করা হচ্ছে, নিস্তব্ধ করে ফেলা হচ্ছে। যাই হোক, এর মধ্যেই আমাদের উঠে দাঁড়াতে হবে। এর মধ্যেই আমাদের কথা বলতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীনের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় অন্যদের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলি খান, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, ড. মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহসানুল হক মিলন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।