ক্ষমতাসীন সিন্ডিকেটের কারসাজিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দরিদ্র ও মধ্যবিত্তের ঘরে ঘরে বোবা কান্না চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, হু হু করে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার দর। অপরিহার্য দ্রব্যগুলোর মূল্য বৃদ্ধিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে দরিদ্র ও মধ্যবিত্তরা।

আজ সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদিন ফারুক, মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, বিএনপি নেতা সলাফত আলী সপু, আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বাজারে সরকারের কোনো নজরদারি নেই। তাদের নজর লুটপাটে। নিজেদের হরিলুট, ভয়াবহ দুর্নীতি ইত্যাদি অপকর্ম ঢাকতে বিএনপি ও জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে বুনে চলছেন হাজার হাজার মিথ্যার জাল।’

গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির বিল বৃদ্ধির প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘গতকাল রোববারও এলপিজি গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। এর পেছনে রয়েছে সরকারের কালোবাজারি, মুনাফাখোর ও মজুতদার সিন্ডিকেট। সবাই আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সবকিছুর দাম এখন চড়া। কয়েক দিন আগের তুলনায় কেজি প্রতি ৬/৭ টাকা বেড়ে মোটা চাল ৬০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১২০-১৪০ টাকা থেকে বেড়ে ১৭৫-১৮০ টাকা, পেঁয়াজের কেজি মোটামুটি দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৫০ টাকা। তেল, চিনিতে যেন বিদ্যুৎ প্রবাহিত হচ্ছে, ছুঁলেই শক করে। ইলিশের দামও কমেনি। দেশের মানুষকে বঞ্চিত করে প্রতিবেশী দেশে পাঠানো হয়েছে। সেখানে দাম কম, অথচ আমাদের দেশে আকাশছোঁয়া। সবজি রান্নার জন্য সামান্য ছোট চিংড়ি কিনতেও প্রতি কেজির দাম পড়ছে ৬০০/৭০০ টাকা। করলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁড়শের কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৬০ টাকায়, বরবটির কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। কাঁচামরিচের দামও অকল্পনীয়ভাবে বেড়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত এক মাসে গুঁড়াদুধের দাম কেজিতে বৃদ্ধি পেয়েছে ২৮ থেকে ৩০ টাকা। শিশুখাদ্যের মূল্যও একইভাবে বেড়ে চলেছে দিনের পর দিন। বাজার সিন্ডিকেটের দাপট দেখে মনে হয় সরকার ও প্রশাসন বাজার সিন্ডিকেটে পৃষ্ঠপোষক।’

এই সরকারের পতন ছাড়া জনগণের মুক্তি আসবে না মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। ২০১৪ সাল কিংবা ২০১৮ সালের মতো জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে আর ডাকাতি-প্রতারণা করতে দেওয়া হবে না। অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমেই দেশে বিরাজমান সংকটের সমাধান। অন্যথায়, ফয়সালা হবে রাজপথে।’