আলেম ওলামাদের কুকুরের সাথে তুলনা করে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহর দেয়া ‘অশালীন’ ও ’কুরুচিপূর্ণ’ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তার অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন।

সোমবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আকরাম খান হলে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের মুখপত্র মাওলানা জাকির হোসাইন।

লিখিত তিনি বলেন, “ধর্মমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ তার এক বক্তব্যে দেশবরেণ্য আলেম ওলামায়ে কেরামকে কুকুরের সাথে তুলনা করেছেন। তিনি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আলেম ওলামাদের মধ্যে বিভক্তি সুষ্টির অপচেষ্টা চালিয়ে আসছেন। তিনি হীন ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য সরকারী আলিয়া মাদ্রাসা এবং কাওমী মাদ্রাসার আলেম ওলামাদের মধ্যে বিভেদ ও সাম্প্রদায়িত দাঙ্গা বাধানোর অপচেষ্টা করছেন। তিনি দেশের ঐতিকহ্যবাহী আলিয়া মাদ্রসাসমুহকে ’আলিয়া-মালিয়া’ বলে চরম কটুক্তি ও কটাক্ষ করে দেশের আলেম-ওলামাদের  প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করেছেন। 

“তিনি আলিয়া মাদ্রাসার আলেম ওলামাদের ন্যাক্কারজনকভাবে কুকুর বলে কটুক্তি করেছেন। এছাড়া তিনি ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ পবিত্র হজ্জ্বকে কুকুরের খাদ্য হিসেবে এক কেজি গোস্তের সাথে তুলনা করে এক জঘন্য উপমা দিয়ে ইসলামী মূল্যবোধের উপর চরমভাবে আঘাত করেছেন।”

মাওলানা জাকির হোসাইন বলেন, “যুগযুগ ধরে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ঐতিহ্য হিসেবে সরকারী খরচে বিশিষ্ট আলেম ওলামা ও ব্যক্তিবর্গকে হজ্বে পাঠানোর রেওয়াজ চলে আসেছে। কিন্তু এ বছর প্রথম তিনি পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে তার পছন্দের একটি বিশেষ মতের প্রায় অর্ধশতাধিখ ব্যক্তিকে হজ্বে পাঠান যা তার প্রদত্ত বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এক কথায় তিনি দল-মত নির্বিশেষে নিরোপেক্ষভাবে দেশের সকল ধর্ম বর্নের মানুষের ধর্মীয় স্বার্থ ও স্বাধীনতা রক্ষায় চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন।”

ধর্মমন্ত্রী জামায়েত ইসমলামকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে দাবি করে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমর মনে করি তিনি দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি বিনষ্ট এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। গত রমজানে চাঁদ দেখা নিয়ে তিনি চরমভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন। কিছুদিন পূর্বে তিনি পবিত্র মিলাদ মাহফিলের বিরুদ্ধে কটুক্তি করে পরবর্তীতে নির্লজ্জভাবে তা অস্বীকার করেছেন। সমব্প্রতি সময়ে ওলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে দেয়া বক্তব্যের ব্যাপারেও তিনি জঘন্য শিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। 

“তিনি তার বক্তব্যে বলেছেন যে, তিনি নাকি জামাতের আলেমদের ইঙ্গিত করে বলেছেন। তাহলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে, আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী হয়ে তিনি কোন কারণে কার স্বার্থে তিনি জামাতের আলেমদেরকে হজ্বে নিয়ে গেলেন এবং কেনইবা তাদেরকে কুকুরের সাথে তুলনা করলেন।”

“তার ভাষায় তিনি ঘেউ ঘেউ বন্ধ করার জন্য কুকুরদের হজ্বে পাঠিয়েছেন। যাই হোক আমরা তার বক্তব্য এবং দুঃখ প্রকাশ  কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছি না। তিনি যে অন্যায় করেছেন তাতে তিনি তার মন্ত্রনালয়ে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন।”

“আমাদের বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিষয়টি সহজভাবে মেনে নেবেন না। ইতিপূর্বে তিনি হজ্জ্বের প্রতি কটুক্তি করায় দলের একজন প্রভাবশালী নেতা ও মন্ত্রীকে মন্ত্রণালয় এবং দল থেকে বহিষ্কার করেছেন । কাজেই আমরা আশা করি প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়টাকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে শেখ আব্দুল্লাকে অবিলম্বে ধর্মমন্ত্রণালয় থেকে অপসারণ ও দল থেকে বহিষ্কার করবেন।”

তরিকত ফেডারেশনের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মনোয়ার হোসাইন রেজভী, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সাঈয়্যেদ মোতাসিম বিল্লাহ রাব্বানী, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ আলী ফারুকী, দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম মিয়াজী, সমাজ কল্যান সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ আলী হোসাইন, যুগ্ম-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. খাজা বাকীবিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী, সমবায় ও পল্লী উন্নয়ন সম্পাদক জাহিদ বাহার বিপুল, স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক ফরিদুজ্জামান সেলিম, যুগ্ম-স্বেচ্ছঅসেবক সম্পাদক ফজলুল হক।