ইউসুফ দিপু: জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর দলের মধ্যে নেতৃত্ব নিয়েই চলছে দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ ও দেবর জিএম কাদেরের সঙ্গে দ্বন্দ্ব। এরশাদের মৃত্যুর পর জাতীয় পার্টির এমন দ্বন্দ্বের আশঙ্কা করেছিলেন অনেকেই। বিষয়টি এরশাদের বিবেচনাতেও ছিল। যে কারণে এরশাদ তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকার হিসেবে ভাই জি এম কাদেরকে বেছে নেন। তবে তাঁর স্ত্রী রওশন এরশাদ তা মন থেকে মেনে নেননি বলে আলোচনা আছে। এ নিয়ে রওশন এবং জি এম কাদেরের অনুসারীদের মধ্যে একধরনের দূরত্ব চলেই আসছিল। 

গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে জি এম কাদেরকে দলের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। ঘোষণার পর জি এম কাদের বলেছিলেন, ‘জাতীয় পার্টিতে কোনো দ্বন্দ্ব, মতভেদ ও বিভেদ নেই। জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধ।

 

কিন্তু দেবর জিএম কাদেরকে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হিসেবে স্বীকৃতি দেননি তার ভাবি ও দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ। গত সোমবার দিবাগত রাতে রওশন এক বিবৃতিতে জানান, জিএম কাদের দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। পরবর্তী চেয়ারম্যান নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান থাকবেন।

 

অন্যদিকে জিএম কাদের বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আমাদের পরিবারে পিতৃতুল্য ছিলেন, সেই ভাবেই বেগম রওশন এরশাদ আমাদের মায়ের মত।পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্দেশনায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করেছি। এখনো পল্লীবন্ধুর নির্দেশনাতেই চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করছি।

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ গঠনতন্ত্র অনুসরণ করেই চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছেন। তারা যে নামেই সম্বোধন করবে তাতে কোন সমস্যা নেই। জাতীয় পার্টিতে কাজ করাটাই আসল কথা। তিনি বলেন, কোন সমস্যা থাকলে আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান করবো। 

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারনা জাতীয় পার্টির (জাপা) ‘প্রাণশক্তি ছিলেন দলের প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম এরশাদ। তাঁর মৃত্যুতে দলের শক্তি অনেকটাই ক্ষয় হয়েছে বলে মনে করেন জাপার নেতা-কর্মীরা। এরশাদের অবর্তমানে দলীয় সংহতি কতটা অটুট থাকবে, ভবিষ্যতে জাপার রাজনৈতিক চরিত্র কেমন হবে, তা নিয়েও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশ্লেষকদের ধারনা নেতৃত্ব নিয়েই দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের সঙ্গে এমন দ্বন্দ্ব।