বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতার মধ্যেই তার চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি ঘুরপাক খাচ্ছে সকলের মাঝে। তবে বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপি নেতা কর্মীরা চায় না তিনি প্যারোলে মুক্তি পাক। তাদের দাবি স্বাভাবিক ভাবেই তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হোক।  

রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তি ও প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি গুরুত্বও পাচ্ছে বেশ। শোনা যাচ্ছে, উন্নত চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তির ব্যবস্থা করে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বিদেশে পাঠানো হতে পারে। এ নিয়ে রাজনৈতিক মাঠে চলছে নানা তৎপরতা। খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে প্যারোলে মুক্তির আবেদন করলেই তার মুক্তি মেলানো সম্ভব বলে মনে করছে সরকার দলীয় লোক। খালেদা জিয়ার মুক্তিতে প্যারোল ছাড়া কোন উপায় নেই।

তবে বেগম খালেদা জিয়া জামিনে মুক্তি পেলে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে বিএনপির তিন দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ, উকিল আবদুস সাত্তার ও আমিনুল ইসলাম সাক্ষাত করতে গেলে তিনি দেশের বাইরে যেতে সম্মতি প্রকাশ করেন।

কিন্তু জামিনে নয় খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে সরকার প্রথম থেকেই ইতিবাচক। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে বিএনপি এমপিরা আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি যদি জামিন পান এবং চিকিৎসকদের পরামর্শে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার মতো অবস্থা থাকে এবং সেই পর্যায়ে তার অবস্থার অবনতি ঘটে সেটা পরবর্তীতে বিবেচনা করা যাবে। তবে বিএনপি যে দাবি করছে, চিকিৎসকদের মতামতের সাথে এর সঙ্গতি নেই।আমার মাধ্যমে তারা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিষয়টি বিবেচনার কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা হয়েছে তবে এই বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে কোন সাড়া আসেনি।

সাজাপ্রাপ্ত আসামির প্যারোলে মুক্তি সম্ভব কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, বিশেষ ক্ষেত্রে সাজাপ্রাপ্ত আসামি, কয়েদি ও হাজতিকে সরকার প্যারোলে মুক্তি দিতে পারে। কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্যারোলে মুক্ত হবেন কিনা সেটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার।

সরকারকেও প্যারোলে মুক্তির সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মুক্তি দেয়ার ক্ষেত্রে প্রথমে সময় একটা বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু পরে প্রয়োজনে তা বৃদ্ধি করা যায়। তিনি বলেন, আমি একসময় ম্যাডাম খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির কথাটা বলেছিলাম। তখন বিএনপি হাইকমান্ড এটিকে সহজভাবে নেয়নি। তারা মনে করেছিলেন এটি বিএনপির রাজনীতিতে পরাজয় হবে।

প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গত দেড় বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন। গত ১ এপ্রিল তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়।