পরিবেশবাদী সংগঠন গো গ্রীন বাংলাদেশ (Go Green Bangladesh) পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প্লাস্টিকের টেকসই বিকল্প হিসাবে তৈরি করছে বাঁশের পণ্য।

গো গ্রীনের নিজস্ব কারখানায় তৈরি হচ্ছে পরিবেশবান্ধব বাঁশের পানির বোতল, থার্মাল ফ্লাক্স, মগ ও চাবি রিং। প্রতিষ্ঠানটি বাঁশের ফাইবার থেকে তৈরি করছে চপিংবোর্ড, ট্রে, কিচেন নাইফ হোল্ডার, কলমদানি, কাপড়ের হ্যাঙ্গার ও ফুলদানি।

প্লাস্টিকের টেকসই বিকল্পকে মানুষের মাঝে জনপ্রিয় করে তোলার অঙ্গীকার নিয়ে ২০১৮ সালের শুরুতে গো গ্রীন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বৃক্ষরোপণ, পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও প্লাস্টিকের বিকল্প নানান পণ্যের প্রচারে যুক্ত রয়েছে গো গ্রীন বাংলাদেশ।

প্লাস্টিকের বিকল্প প্রচারণার পাশাপাশি এবার নিজেরাই বাজারে এনেছে বাঁশের পণ্য। ইতিমধ্যে ক্রেতাদের মাঝে সাড়া ফেলেছে পানির বোতল, ফ্লাক্স, চপিংবোর্ড ও ট্রেসহ বাকি পণ্যসমূহ। 

যশোরের নাভারণে অবস্থিত গো গ্রীনের নিজস্ব কারখানায় আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে বাঁশের পণ্য। 

গো গ্রীনের সভাপতি পেশায় গণমাধ্যমকর্মী ফজলুর রহমান রাজুর তত্ত্বাবধানে তৈরি হচ্ছে এসব পণ্য।

গো গ্রীনের কারখানায় কাজ করছেন তৃণমূলের নারীরা। 

গো গ্রিন বাংলাদেশের তৈরি বাঁশের পণ্যের উদ্যোগ নিয়ে রাজু বলেন “পরিবেশ নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমরা দেখতে পাই, মানুষের সামনে প্লাস্টিকের কোন বিকল্প নেই৷ ফলে মানুষ বাধ্য হয়েই প্লাস্টিকের পণ্য ব্যবহার করে। এই উপলব্ধি থেকে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে প্লাস্টিকের বিকল্প পণ্য ব্যবহারের প্রচার শুরু করি। প্রচারণার এক পর্যায়ে বিকল্প হিসেবে বাঁশের তৈরি পণ্যকে যুতসই আর টেকসই মনে হলো। এভাবেই শুরু করি গো গ্রীন বাংলাদেশ ।

আমরা বিশ্বাস করি প্লাস্টিকের সমমূল্যে মানুষকে টেকসই বিকল্প পণ্য দিলে মানুষ আর প্লাস্টিকের পণ্য ব্যবহার করবে না।”

গো গ্রিন বাংলাদেশের কারখানায় বর্তনানে ১০ জন শ্রমিক কাজ করছে। যাদের অধিকাংশই গ্রামের নারী। পরিবেশ রক্ষায় তারা যেমন ভূমিকা রাখছেন, তেমনি আর্থিকভাবেও স্বাবলম্বী হচ্ছেন। বাঁশ প্রক্রিয়াজাতকরণ থেকে শুরু করে একেবারে শেষ ধাপ পর্যন্ত সরাসরি তত্ত্বাবধানে রয়েছে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ। যারা স্থানীয় পর্যায়ে বাঁশ নিয়ে কাজ করেন, তিনি জানান।

রাজু বলেন, “পরিবেশবান্ধব পণ্য নিয়ে কাজ করা খুবই ঝুকিপূর্ণ। একদিকে এটা সম্ভাবনাময়। অপরদিকে ব্যয়বহুল৷ পণ্যকে প্লাস্টিকের চেয়ে কম দামে মানুষের হাতে পণ্য তুলে দেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য।”

ইতিমধ্যে ক্রেতাদের মাঝ থেকে ভালো সাড়া পেয়েছেন জানিয়ে তিনি আরো জানান, "খুচরা পর্যায়ে আমরা ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। তবে আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আমাদের সাথে যুক্ত করা। যারা ব্যবসা করতে গিয়ে পরিবেশবান্ধব পণ্যের প্রচারণার পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে জনমনে সচেতনতা তৈরি করবে।

বিক্রির উদ্দেশ্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কাজ করলেও তারা একসময় পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীতে পরিণত হবেন।