বেসরকারি চাকরিজীবীদেরও বেতন দেবে সৌদি আরব সরকার। করোনা মহামারীর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানিগুলোতে নিয়োজিত কর্মীদের বেতনের ৬০ শতাংশই সরকারের কোষাগার থেকে পরিশোধ করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।


আগামী তিন মাস ধরে দেয়া হবে বেতনের টাকা। মহামারীর আর্থিক প্রভাব কমাতে সৌদি সরকারের নেয়া সবচেয়ে বড় দু’টি অর্থনৈতিক প্যাকেজের একটি। এজন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২৬০ কোটি মার্কিন ডলার। এতে বেসরকারি খাতের অন্তত ১২ লাখ কর্মী উপকৃত হবে। সেই সঙ্গে বেঁচে যাবে কোম্পানিগুলোও। কর্মী ছাঁটাইয়েরও প্রয়োজন হবে তাদের। খবর ব্ল–মবার্গের।


সৌদির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে যাতে কোনো কর্মীকে ছাঁটাই করা না লাগে এবং অর্থনীতি টিকিতে রাখতে বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ নিজে বিশাল এই আর্থিক প্যাকেজের ঘোষণা দেন। খবরে বলা হয়েছে, যেসব প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের ছুটি দিতে বাধ্য হয়েছে তারা এই প্যাকেজ সহায়তার জন্য আবেদন করতে পারবে। আগামী তিন মাসের জন্য কর্মীদের বেতনের ৬০ শতাংশ সরকার পরিশোধ করবে। একজন কর্মীর জন্য এই প্রণোদনার পরিমাণ তিন মাসে সর্বোচ্চ ৯ হাজার সৌদি রিয়াল (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় দুই লাখ ৪৬ হাজার টাকা)।


অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আল জাদান এই বিশাল প্যাকেজ ঘোষণার জন্য বাদশাহ সালমানকে ধন্যবাদ জানিয়ে বেসরকারি খাতের সংস্থাগুলোকে শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। মহামারীর প্রাদুর্ভাবের সময় লোকজন যাতে কম ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বাঁচার উপায় খুঁজে পান সেজন্য এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।


মন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় বেকার সহায়তা ব্যবস্থা সনদের মাধ্যমে নতুন এই সহায়তা প্যাকেজ পরিচালনা করা হবে। প্রায় ১২ লাখ সৌদি এই আর্থিক প্রণোদনায় উপকৃত হবে। তিন মাস এই সহায়তা দেয়ার পর বিষয়টির পর্যালোচনা করবে ফিনান্সিয়াল অথরিটি। সেখানে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে এই ব্যবস্থা আরও বাড়ানো হবে নাকি বন্ধ করে দেয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, এপ্রিল মাসের বেতনের নগদ প্রণোদনা মে মাসের ৩ তারিখের মধ্যে অফিসগুলোতে পাঠানো হবে।


এর আগে কোভিড-১৯ এর বিস্তার ঠেকাতে সাত হাজার কোটি রিয়ালের আরেকটি বিশাল প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সৌদি সরকার। করোনার লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত সংস্থাগুলোকে সহায়তায় এই প্যাকেজের ব্যবস্থা। করোনার বিস্তার ঠেকাতে সৌদি আরবের বিভিন্ন শহরে লকডাউন ঘোষণা করে কারফিউ জারি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত দেশটির মক্কা, মদিনা, জেদ্দা, রিয়াদ, আজইয়াদ, আল মাসাফি, মিসফালাহ, আল হুজুন, নাকাসা ও হোশ বকর এলাকায় প্রবেশ বা বহির্গমন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারফিউ চলাকালীন সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যে শুধু চিকিৎসা ও নিত্যপণ্য কেনাকাটায় বাইরে যাওয়া যাবে।


সৌদি আরবে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে করোনাভাইরাস। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে ১৬৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের। এই নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল এক হাজার ৮৮৫ জনে। মোট মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের।