ভারত থেকে কথিত অবৈধ বাংলাদেশিদের তাড়ানোর দাবিতে দেশটির অন্যতম শহর মুম্বাইয়ে মিছিল ও জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

লক্ষাধিক গেরুয়া সমর্থকের উপস্থিতিতে ওই জনসমাবেশ করে দেশটির উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল ‘মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা’।

বর্তমানে মুম্বাইয়ের প্রভাবশালী একটি রাজনৈতিক দল এটি।

১৪ বছর আগে উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল শিবসেনা থেকে বেরিয়ে এসে ‘মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা’ নামে দল গড়েন বালাসাহেব ঠাকরের ভাইয়ের ছেলে রাজ ঠাকরে।

এর পর থেকেই বিভিন্ন ইস্যুতে দলটি ভারতে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ওই জনসমাবেশে লাখ ভারতীয়র মধ্যে ‘মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা’র সভাপতি রাজ ঠাকরে চিৎকার করে বলেন, ভারতে কোনো ধর্মীয় উপাসনালয় নয় যে যেই আসবে তাকেই আপ্যায়ন করা হবে। এখান থেকে বাংলাদেশি ও পাকিস্তানিদের তাড়িয়েই ছাড়ব আমরা।’

রাজ ঠাকরে বলেন, ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানীয়ের মতো অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ করাও ভারতের জন্য একটি মৌলিক ইস্যু। আর সেই ইস্যুতেই আমরা বাংলাদেশি ও পাকিস্তানিদের দেশছাড়া করতে ডাক দিচ্ছি।’

তিনি যোগ করেন, ‘অবৈধ অভিবাসীদের তাড়ানোর বিষয়টি অন্যান্য দেশ আগেই করেছে। ব্রিটেন, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াও অবৈধ নাগরিকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে। সুতরাং একই কার্যক্রম ভারতে করলে কোনো সমস্যা নেই। ’

এসব বলেই ক্ষান্ত হননি কট্টর হিন্দুত্ববাদী দলপতি রাজ ঠাকরে।

তিনি বলেন, আমি পরিষ্কার বলতে চাই– এই ইস্যুতে আমরা অস্ত্র হাতে নিতে রাজি।’

বিবিসি জানিয়েছে, রোববার দেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের তাড়ানোর দাবিতে ও নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) সমর্থনে ডাকা জনসভায় গেরুয়া পতাকা নিয়ে হাজার হাজার কর্মী যোগ দেন।

তারা মুম্বাইয়ের গোরেগাঁওতে হিন্দু জিমখানা গ্রাউন্ড থেকে শহরের দক্ষিণ প্রান্তে আজাদ ময়দান পর্যন্ত বিশাল পদযাত্রার আয়োজন করে।

পদযাত্রাকালে ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ করা বাংলাদেশি ও পাকিস্তানিদের তাড়াতে হবে বলে দাবি জানান দলটির নেতাকর্মীরা।

উল্লেখ্য, দিল্লিতে একসময় কথিত বাংলাদেশিসহ অবৈধ বিদেশি নাগরিক তাড়ানোর ইস্যু ছিল বিজেপির বড় রাজনৈতিক হাতিয়ার।

তবে দিল্লির বিধানসভার নির্বাচনে সে ইস্যুকে ঢেকেই রেখেছে বিজেপি। এবার সেই ইস্যুকে হাতিয়ার হিসেবে নিয়ে জনসমর্থন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা।

ভারতে অবৈধ বাংলাদেশি মুসলমান রয়েছে দাবি করে তাদের দেশছাড়া করতে দাবি তুলছে তারা।বিষয়টিকে ভারতে একটি বড় রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত করতে সচেষ্ট হয়ে উঠেছে দলটি। তবে সেই ইস্যুতে এত বড়মাপের রাজনৈতিক কর্মসূচি এই প্রথম করল দলটি।

প্রসঙ্গত গত ডিসেম্বরে মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইন সংশোধনী পাসের পর এর বিরোধিতায় ভারতজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়।

প্রথম থেকেই কংগ্রেস, তৃণমূল, আম আদমি পার্টিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক সংগঠন সাম্প্রদায়িকতা উসকে দেয়া হচ্ছে অভিযোগ করে আইনটির বিরোধিতা করে আসছে।