বিশ্ব মা দিবস আজ। জন্মদাত্রী মা, যার কল্যাণে পৃথিবীতে আলোর মুখ দেখা হয় সন্তানের। সেই মায়ের স্মরণে ১০ মে পালিত হয় দিবসটি। মা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশে ব্যতিক্রমী আয়োজন করেছে স্বপ্ন নামের একটি প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি ‘স্বপ্ন মা সেরা দশ’ নামে ১২ উপজেলার ১২ জন মা’কে নিয়ে ব্যতিক্রমধর্মী এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এতে এ বছর সেরা মা হয়েছেন গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ইতি আক্তার, দ্বিতীয় হয়েছেন লক্ষ্মীপুরের ফাতেমা আক্তার এবং তৃতীয় হয়েছেন একই জেলার রামগঞ্জ উপজেলার রাজিয়া বেগম। বিশেষ সম্মাননা পেয়েছেন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার নন্দিতা মণ্ডল।

কিছু কিছু ইতিহাসবিদের মতে, মা নিয়ে এই দিনটির সূত্রপাত হয় প্রাচীন গ্রিসের মাতৃ আরাধনার প্রথা থেকে। গ্রিক দেবতাদের মধ্যে এক বিশিষ্ট দেবী সিবেলের উদ্দেশে পালন করা হত একটি উৎসব। ধারণা করা হয় মহাবিষুবের সময়েও এমন একটি উৎসব পালন হতো। প্রাচীন রোমানদের ‘ম্যাত্রোনালিয়া’ নামে দেবী জুনোর প্রতি উৎসর্গিত আরও একটি বিশেষ দিনের কথা জানা যায়। 

ইউরোপ এবং যুক্তরাজ্যে দীর্ঘকাল ধরে পালিত হচ্ছে মাদারিং সানডে। ক্যাথলিক পঞ্জিকা অনুযায়ী এটিকে বলা হয় ‘লেতার সানডে’, যা কিনা চতুর্থ রোববার পালন করা হয় ভার্জিন মেরি বা কুমারী মাতার সম্মানে। অন্যদিকে সনাতন ধর্মে এই দিনটিকে ‘মাতৃ তীর্থ আনুসি বা এক পক্ষকাল ব্যাপী মাতৃ তীর্থযাত্রা হিসেবে গণ্য করা হয়। যা নেপালে হচ্ছে। তবে মা দিবসে রয়েছে আরও অনেক বড় ইতিহাস। করলিনার যুদ্ধে স্প্যানিশ সৈন্য কর্তৃক বলিভিয়ার নারীরা নৃশংসভাবে হত্যা হন। যুদ্ধের নির্মম স্মৃতিস্মারক হিসেবে ১৯২৭ সালে ৮ নভেম্বর সেখানে সরকারিভাবে মা দিবস আইনি স্বীকৃতি পায়। ইরানে মা দিবস পালিত হয় হয়রত মুহাম্মদ (স:) এর মেয়ে মা ফাতেমার জন্ম তারিখে।

ইতিহাস থেকে জানা যায় ১৯১২ সালে আনা জার্ভিস মাদারস ডে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন (আন্তর্জাতিক ‘মা’ দিবস সমিতি) গঠন করে। এমন কি তিনিই মে মাসের দ্বিতীয় রোববার ‘মা’ দিবস এই দুটি শব্দের বহুল প্রচারণা চালাতে সক্ষম হন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুকরণে ১৯২২ সালে আলভারো ওব্রেগন সরকার মা দিবসের প্রচলন করেন। সেই থেকে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, বাংলাদেশসহ ৬০টি দেশে পালিত হয় ‘মা’ দিবস। পরবর্তীতে ১৯৩০ সালে যা কিনা দেশাত্মবোধক উৎসবে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করেন লাজারো কার্দেনাস সরকার।

বাংলাদেশেও মা দিবসটি বেশ উদ্দীপনার সঙ্গে পালন করছে সবাই। আয়োজন করা হচ্ছে নানা অনুষ্ঠান। তারই অংশ হিসেবে মা দিবসে সেরা মা এর তালিকা প্রকাশিত হলো। যা আয়োজন করেছে স্বপ্ন।

বেসরকারি সংস্থা ডরপ ও এফএনবি আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিচারক হিসেবে ছিলেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, নিরাপদ সড়ক চাই এর চেয়ারম্যান ও ডরপ’র উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইলিয়াস কাঞ্চন। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন দিলরুবা সাথী।

স্বপ্ন মা সেরা দশ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের প্রত্যেককে স্যাসে, ক্রেস্ট, প্রাইজবন্ড ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। প্রথম বিজয়ীকে মুকুট পরিয়ে দেন অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ।