ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে মজনু নামে এক যুবকের গ্রেফতার হওয়া প্রসঙ্গে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, এ ঘটনা নিয়ে সরকার জজ মিয়ার কাহিনি তৈরির চেষ্টা করছে। ধর্ষণের অপরাধে একজন দুর্বল, রোগা ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। তার পক্ষে একজন মেয়েকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা অস্বাভাবিক।

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী ধর্ষণসহ সারা দেশে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান ড. কামাল হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মইন খান। এছাড়া বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

৫ জানুয়ারি রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হন। ৮ জানুয়ারি ওই ঘটনায় মজনু নামে একজনকে গ্রেফতারের কথা জানায় র‌্যাব। র‌্যাব এও জানায়, গ্রেফতার মজনু একজন সিরিয়াল রেপিস্ট। র‌্যাব জানায়, মজনু মাদকাসক্ত। তার বাড়ি হাতিয়ায়। সে এর আগেও ওই একই এলাকায় ভিক্ষুক ও প্রতিবন্ধী নারীদের ধর্ষণ করেছে। ধর্ষণের শিকার ছাত্রী মজনুর ছবি দেখে তাকে শনাক্ত করেছেন বলেও জানানো হয়।

মান্না বলেন, একজন রোগা ব্যক্তি একজন মেয়েকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করতে পারে না। তাকে রোধ করা একজন মেয়ের পক্ষে অসম্ভব নয়। অথচ সেই রোগা ব্যক্তিকে ধর্ষক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শনাক্ত করেছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগের একজন শিক্ষক জবানবন্দি দিয়েছেন। অথচ অন্য কোনো দলের শিক্ষক, ডাকসু ভিপিসহ কাউকে ধর্ষিতা ছাত্রীর সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না।

তিনি বলেন, আমরা কেউ নিরাপদে নেই, সরকার কোন নাটক কোন সময় ঘটাচ্ছে তা একটি চিন্তার বিষয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রীর ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও ছাত্রলীগ কখনও এগিয়ে আসে না। অথচ ডাকসু ভিপি নুরুকে মারধরের পর সেই ছাত্রলীগ সকালবেলা ধর্ষণের প্রতিবাদে মিছিল বের করে। ছাত্র রাজনীতিকে ধ্বংস করার চেষ্টা চলছে। ভিপি নুরের ওপর হামলার ঘটনা ধামাচাপা দিতে নতুন করে জজ মিয়ার ঘটনা তৈরির চেষ্টা করা হলে আমরা তা মেনে নেব না।

তিনি বলেন, সরকার অর্থনীতির রোলমডেল দাবি করলেও পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে আগের তুলনায় আটগুণ ব্যয় বেড়েছে। কয়েকটি ফ্লাইওভার বানিয়ে উন্নয়নের জোয়ার তোলা হলেও ঢাকা শহরে যানজট আরও বাড়ানো হয়েছে। মেগা প্রকল্পের নামে মেগা লুট করা হচ্ছে।

নতুন করে সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে মান্না বলেন, সিটি নির্বাচনকে নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়া হচ্ছে। আমরা এ ভোট করছি ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, নারীর সম্ভ্রম রক্ষা করতে, খুন-গুম চিরতরে রক্ষা করতে। আপনারা (সরকার) যা করেছেন ভালো করেছেন, এখন বন্ধ করে ভালো হয়ে যান। আগামী ৩০ জানুয়ারি যদি নতুন করে কোনো ষড়যন্ত্র করেন, তবে সবাই দলবদ্ধ হয়ে ৩১ জানুয়ারি দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হবে।