আল্লামা আহমদ শফীকে হত্যার অভিযোগে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ৩৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়েরের পর নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন মামুনুল হক।

বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) এক ভিডিও বার্তায় এ দাবি করেন তিনি। ভিডিও বার্তায় মামুনুল হক বলেন, 'আল্লামা শফী গত সেপ্টেম্বর মাসের ১৮ তারিখে মারা গেছেন। আমি আল্লামা শফীর একজন ভক্ত, এবং তারা হাতে বায়াত গ্রহণকারী একজন মুরিদ। তিনি আমাকে আধ্যাত্মিকতার পথে মেহনত করার অনুমতি দিয়েছেন, খেলাফত প্রদান করেছেন। সারা দেশবাসীর সঙ্গে আমরাও শোকাহত।'

হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব আরো বলেন, 'আল্লামা শফীর মৃত্যুর পর থেকে আমরা একটি গুঞ্জন শুনতে পাচ্ছিলাম, যে মহলটি তার জীবদ্দশা থেকে তার ইমেজকে পুঁজি করে ব্যক্তিগত স্বার্থ আদায়ের অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিলো, তার মৃত্যুর পরও সেই কাজ থেকে তারা ফিরে আসেনি। আল্লামা শফীর মৃত্যুর পর তার বড় ছেলে তার ইন্তেকাল করাকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে আখ্যায়িত করেছেন সকলের সম্মুখে। এবং তার হাতে গড়া মইনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জাতির সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। অথচ এতদিন পর একটি স্বার্থান্বেষী মহল তার মৃত্যুকে অস্বাভাবিক দাবি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। আমি বিষ্মিত হয়েছি যে ৩৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তাদের মধ্যে আমার নামও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আমি আল্লামা শফীর মৃত্যুর সময় ও আগে তার পাশাপাশি ছিলাম না।'

মামুনুল হক আরো জানান, আমার নাম এখানে অন্তর্ভূক্ত করায় এখানে তাদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়ে যায়। বিশেষভাবে করে তারা আমাকে ঘায়েল করতে চায়। আল্লামা শফীর মৃত্যুকে পুঁজি করে ব্যক্তিগত স্বার্থ আদায়ের এই খেলা ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা বরদাশত করবেনা। আমি আশা করি পুলিশের প্রাথমিক তদন্তেই মামলাটি খারিজ হয়ে যাবে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন সত্যতা নেই এবং তারা পাবেনও না। তারা তাদের স্বার্থ আদায়ের জন্য এই মামলা করে আমার মানহানি ঘটিয়েছে। আলেম ওলামাদের সঙ্গে পরামর্শ করে তাদের বিরুদ্ধেও আমি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো ইনশাল্লাহ।'

এর আগে, বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমীর আহমেদ শফীকে হত্যার অভিযোগে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হক, আজিজুল হক ইসলামাবাদী, নাসির উদ্দিন মনিরসহ ৩৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়ে। মামলাটি করেন আহমদ শফীর শ্যালক মোহাম্মদ মাইনুদ্দীন। বিচারক শিপলু কুমার দে'র আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছে।

উল্লেখ্য, বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) এক আলোচনা সভায় আহমদ শফীর মৃত্যু স্বাভাবিক নয় উল্লেখ করে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান তার অনুসারীরা। অনুষ্ঠানে হেফাজতের ইসলামের বর্তমান কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠন করার দাবি জানান তারা।