ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশনে (ইসি) ২০১৮ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন (আয় ও ব্যয়ের হিসাব) জমা দিয়েছে। বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ইসিতে এ প্রতিবেদন জমা দেন।

প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর ইসির মিডিয়া সেন্টারে এইচ টি ইমাম সাংবাদিকদের বলেন, এবার আওয়ামী লীগের আয় হয়েছে ২৪ কোটি ২৩ লাখ ৪২ হাজার ৭০৭ টাকা। ব্যয় হয়েছে ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার ৫৫৭ টাকা। দলের তহবিলে বর্তমানে ৩৭ কোটি ৫৭ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮৭ টাকা অবশিষ্ট রয়েছে।

তিনি আরও জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও কেন্দ্রীয় কার্যালয় নির্মাণের কারণে ২০১৮ সালের ব্যয় ৩৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেড়েছে। ব্যয়ের উল্লেখযোগ্য অংশ অর্থাৎ ৫৬ লাখ ৫৩ হাজার ১০০ টাকা ব্যয় হয়েছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় নির্মাণ বাবদ।

আওয়ামী লীগের বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা যায়,  নমিনেশন ফরম বিক্রি বাবদ সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে দলটির। এর পরিমাণ ১০ কোটি ৮৮ লাখ ১০ হাজার টাকা। এছাড়া অনুদান থেকে এসেছে ৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ৮৫ হাজার ৩৫৫ টাকা। এর বাইরে সদস্য ফি, ফরম বিক্রি, সংসদ সদস্যদের চাঁদা, জাতীয় কমিটি, উপদেষ্টা পরিষদের চাঁদা ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের মাসিক চাঁদা থেকে দলটির আয় হয়েছে।

ইসির তথ্যানুযায়ী, ২০১৩ সাল থেকে প্রত্যেক বছরই আওয়ামী লীগ লাভের মুখ দেখছে। ২০১৭ সালে আওয়ামী লীগ আয় ছিল ২০ কোটি ২৪ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩৬ টাকা। বিপরীতে একই বছরে দলটির ব্যয় হয়েছে ১৩ কোটি ৬৩ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৯ টাকা। বছর শেষে তাদের ৬ কোটি ৬১ লাখ ৪৮ হাজার ১১৭ টাকা উদ্বৃত ছিল।

২০১৬ সালে দলটির আয় হয়েছিল ৪ কোটি ৮৪ লাখ ৩৪ হাজার ৯৭ টাকা। বিপরীতে ব্যয় করেছিল ৩ কোটি ১ লাখ ৮৪ হাজার ৭৯৯ টাকা। উদ্বৃত ছিল ১ কোটি ৮২ লাখ ৪৯ হাজার ২৯৯ টাকা।

এর আগে ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগ আয় করে ৭ কোটি ১১ লাখ ৬১ হাজার ৩৭৫ টাকা। ব্যয় করে ৩ কোটি ৭২ লাখ ৮১ হাজার ৪৬৯ টাকা। ওই বছরও দলটি প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত দেখিয়েছিল।

২০১৪ সালে দলটি আয় দেখিয়েছে ৯ কোটি ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪৩ টাকা। আর ব্যয় দেখিয়েছে ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ৮২১ টাকা। সে বছর প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত ছিল আওয়ামী লীগের।

২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ আয় দেখিয়েছিল ১২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আর ব্যয় দেখিয়েছিল ৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এ বছর প্রায় ৬ কোটি টাকা দলটির উদ্বৃত্ত ছিল।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালুর পর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী প্রতিবছর আর্থিক লেনদেনের হিসাব দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর। কোনো দল পরপর তিন বছর আয়-ব্যয়ের হিসেব জমা না দিলে ইসি চাইলে তার নিবন্ধন বাতিল করতে পারে।