বিশেষ প্রতিনিধিঃ
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও উপজেলা পর্যায়ের নির্বাচনে যারা ব্যক্তিস্বার্থে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, তারা আর কখনই দলীয় মনোনয়ন পাবেন না। এমনটাই জানিয়েছে দলীয় সূত্র।
মুলত
আগে থেকেই দলীয় নেতা-কর্মী ও এমপিদের প্রতি এমনি হুঁশিয়ার ছিল আওয়ামী লীগ সভানেত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
অভ্যন্তরীণ
কোন্দলকে চিহ্নিত সদ্য সমাপ্ত চতুর্থ দফায় উপজেলা পর্যায়ের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত
প্রার্থীদের হারের কারণ নিশ্চিত করা হয়েছে। নড়াইল-২ আসনে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ওয়ানডে
অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার শ্বশুর বাড়ির এলাকার নিজ কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ মনোনীত
প্রার্থী রাশেদুল বাসার ডলার পেয়েছে মাত্র ১০ ভোট ও বিদ্রোহী প্রার্থী পেয়েছে ১১৩০
ভোট। এ ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলায় নির্বাচনে এরকম অবস্থা দেখা গেছে অনেক। উপজেলা পর্যায়ের
নির্বাচনে দেখা গেছে বিদ্রোহী প্রার্থীর কারনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা পরাজিত
হয়েছে। দলীয় কোন্দলই আওয়ামী লীগের বিজয়ের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল দলের উচ্চ পর্যায়
মনে করছে এমনটাই।
জানা
যায়, জেলায় জেলায় নেতার সঙ্গে এমপির, এমপির সঙ্গে মন্ত্রীর, এমনকি এমপির সঙ্গে নিজ
দলের স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধির দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে
বিশাল আকারে। আওয়ামী লীগ সমর্থিত পেশাজীবীদের দ্বন্দ্বের চিত্রও এখন প্রকাশ্যে।
একাদশ
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে কেন্দ্রীয়
নেতা ও দলের এমপিদের এ বার্তা ছিল দলের পক্ষ থেকে । একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় চার
স্তরের রিপোর্ট ও ব্যাপক যাচাই-বাছাই শেষে তুলে দিয়েছিলেন দলীয় প্রতীক নৌকা। যারা ক্ষমতায়
থেকে জনবিচ্ছিন্ন, দখলবাজ, নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে সাংগঠনিক ক্ষতি করেছেন, এলাকায়
গডফাদারের ভূমিকায় দলকে করেছেন বিতর্কিত, এমন এমপি-মন্ত্রীরাও নৌকায় চড়তে পারেননি।
সূত্রমতে,
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার ধাপে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করছেন। ইতিমধ্যে দলীয় প্রার্থীদের
ব্যাপারে তার হাতে কয়েক দফা রিপোর্ট এসেছে।
কিছু
কিছু এমপি-মন্ত্রীর এলাকায় গডফাদারের ভূমিকা, বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের
দলে ভেড়ানো, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো, নির্বাচনী এলাকার জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক না
রাখা ও এলাকায় খুবই কম যাওয়া, নিজস্ব বলয় সৃষ্টির মাধ্যমে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বিভক্ত
করে রাখা, স্বজনপ্রীতি ও অযোগ্যদের দলে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া, চাকরি দেওয়ার কথা বলে
নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে চাকরি না দেওয়া ও টাকা ফেরত না দেওয়া, বিরুদ্ধে
বললেই হামলা-মামলা দিয়ে হয়রানি বা পঙ্গু করে দেওয়া অথবা জীবন নিয়ে নেওয়া, ত্যাগী নেতা-কর্মীদের
সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং বিদ্যুতের লাইন দেওয়ার নাম করে জনসাধারণের কাছ থেকে বাড়তি টাকা
নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া স্থানীয়ভাবে পুলিশকে ব্যবহার করে নিজ দলীয় নেতা-কর্মীদের
হয়রানির মতো অভিযোগও আছে কোনো কোনো এমপির বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে,
তাদের এবার দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে না।